রাজপুরে অন্তঃপুরে মা আমার
সমরেন্দ্র
বিশ্বাস
রাজপুরে
অন্তঃপুরে মা আমার কৌশল্যা নয়,
তাই
যব জোয়ারের শুখা রুটি পেটে
সন্তান
সন্ততির গর্বে ডগোমগো
প্লাস্টিকের
চটি পায়ে চটাস চটাস,
মা
আমার কাজে যায় রোজ।
কিলোর
হিসেবে
তুলো
থেকে সুতো বাছা হলে
প্রাত্যহিক
মজুরের ক্লান্তি গায়ে মেখে
স্পিনিং
মিলে তড়িঘড়ি ঘন্টা বেজে ওঠে,
বিকেলের
ক্র্যাচ্ টেনে মা আমার ঘরে ফিরে এলে
দু্চোখের
রোমে রোমে তার
সাদা
সাদা স্বপ্ন হয়ে লেগে থাকে তবু
তুলো
তুলো আঁশ।
মা
আমার কৌশল্যা নয়,
তাই
বড়
ছেলে রাম
কন্ট্রোলের
ঠাসা ভিড়ে ছেঁড়া-জামা ছিঁড়ে
কেরোসিন
লিটার আধেক
ঘরে
নিয়ে এলে
অযোধ্যার
রাজপুরে কুপির আলোয়
কেঁপে
ওঠে বড় তার আলু থালু মুখ!
ঘেঁষ
কয়লার কাঁচুমাচু আঁচ ফুড়ে
গোল
গোল রুটি হওয়া মায়ের উদ্বেগ
ছুটে
আসে সন্তানের ক্ষুধার্ত থালায়।
ভাঙা
কাঁচ হ্যারিকেনে ঝুল ফেলে শিখা;
রাম
আর লক্ষণের ঘুম ঘুম চোখে
ঢুলু
ঢুলু জেগে থাকে কিশলয় বই,
জীবিকার
লোকাল ট্রেনে
তখনো
ফেরেনি ঘরে শ্রম-শ্রান্ত পিতা।
বারোয়ারি
কলোনির রাত
থেমে
গেলে ঝিঁঝিঁর উল্লাসে,
দুঃখ
ভাঙা ম্লান চাঁদ ঢেকে দিলে টালি,
ভাঙাচোরা
বারান্দার রাজকীয় থামে ঠেস দিয়ে
গোপনে
গোপনে
মা
কি আজো একা একা কাঁদে?
রামেরা
জানে না।
Comments
Post a Comment