অবিকল সেই ডাকঃ অমল ! অমল !
সমরেন্দ্র বিশ্বাস
অবিকল সেই ডাক ভেসে যায় বাতাসে বাতাসে,
অবিকল সেই ডাকে ভয়ে কাঁপে দাঙ্গার শহর ;
অবিকল সেই ডাক জেগে থাকে টলোমলো নায়ে
যেখানে দাঁড়িয়ে মাঝি প্রাণপণে যোঝে ;
ছেদহীন সেই ডাক লেপ্টে আছে দ্যাখো
ক্রুশবিদ্ধ অমলের মুখে ।
অবিকল সেই ডাক দিন নেই রাত্রি নেই আমাকে ছোঁটায় ।
#
এই ঘোর সন্ধ্যাবেলা শুনি
পাঁজর ফাটানো হাঁক - অমল ! অমল !
কে এই অমল কেউ তা জানে না ;
কিংবা জানে কেউ কেউ
আর জানে আমাদের ক্লান্ত নিঃসঙ্গতা ।
#
নাগরিক ক্লান্ত জলোচ্ছ্বাসে
এই ডাক ঘুরে ঘুরে শূণ্যে পাক খায় ।
পথের ট্রাফিক
হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে অবাক বিস্ময়ে ।
অমল কি এ শহরে এতই অচেনা ?
#
এই ঘোর সন্ধ্যাবেলা
মানবিকতার ছাই ওড়ে
চার্চের চূড়ায়,
শীতের পাখীর মতো মানুষের প্রেম খোঁজে
হিম জলাভুমি ,
বিহারের আরোয়ালে পাশাপাশি শুয়ে থাকে
স্বপ্ন আর লাশ –
অমলের হৃৎপিন্ড জানি এ সময়ে আমাদের বড় প্রয়োজন।
কে এই অমল ? – আর কেউ না জানুক
তাকে জানে জীবনের শ্রেণীদ্বন্দ্ব যত,
আর জানে ম্যান্ডেলার কাঁটাঘেরা বছর পঁচিশ ।
#
এই ঘোর সন্ধ্যাবেলা তাই আজো তীব্র কেউ কেউ
ঘোড়ার লাগাম টেনে জোরে জোরে হাঁকে
অবিকল সেই ডাক – অমল ! অমল !
[ কাব্যগ্রন্থ –
অনন্ত জলশব্দে আমি ]
Comments
Post a Comment