পঙ্গু পরিবেশ ভাবনা ও কবিতার ক্র্যাচ্‌



সমরেন্দ্র বিশ্বাস

কথা ছিল, আমাদের হাতের থেকে স্বচ্ছ্বতার স্ফটিকেরা ঝরে পড়লে মাটি থেকে উঠে আসবে প্রার্থনা সঙ্গীত। এমনটাই কথা ছিল, হরিণেরা বনে সবুজ সংকেত পাঠাবে, মেঘের দরজা খুলে বেরিয়ে আসবে বৃষ্টির বেহালা । আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবা গেছিল, বুকের সিন্দুকে আটকে রাখা সভ্যতার বিলাসকে হাওয়ায় উড়িয়ে দিলেই হেসে উঠবে রমনীয় পরিবেশ, পাখীর ডানায় প্রকৃতির ছন্দ। কিন্তু হয় নি, এসব কিছুই হচ্ছে না।
#
ভোগবাদ হিংস্র ড্রাগনের মতো জিভ বের করে হাসে। ভবিষ্যতের ক্যানভাসটা লোভ-লিপ্সার দামাল হাওয়ায় ফালাফালা। ব্যালেরুমের বিয়ার শেষ হলে পরিত্যক্ত ক্যানের মতো মানব-জমিনে পড়ে থাকে সময়ের প্লাস্টিক অস্তিত্ব ।
#
এখন প্রার্থনা সঙ্গীতের শব্দে শব্দে মাটিতে ছড়িয়ে যাচ্ছে সভ্যতার অ্যাসিড-কৃষ্টাল । নাচতে চেয়েছিলো যে প্রকৃতি, আর্শিতে ধরা তার প্রতিবিম্ব আজ কাঁপতে থাকা ইঞ্জিনের কালোধোঁয়া, জেনারেটরের শব্দে খান খান ভেঙ্গে পড়ছে কাঁচ, হিমযুগ পেরিয়ে তপ্তকুন্ডের দিকে স্বপ্নের সাজঘর । আকাশের মেঘ থেকে বৃষ্টির বেহালার বদলে বেরিয়ে আসছে আগুনের হিস হিস ফনা। সবুজ জমিতে পড়ে থাকছে হরিণের লাশ, পৃথিবীতে শেষ মৃগনাভির গন্ধ। মাটি ভেদ করে উঠে আসছে মৃত ফসল, সমাপ্তি সংগীত। আমাদের হাতের স্ফটিকেরা আজকাল হয়ে যাচ্ছে অন্ধ মানুষের অবিবেচক ভঙ্গুরতা।

#
Picture : collected from net.

Comments

Popular posts from this blog

জীবন

আমার অপমানিত সিঁড়ির বুক মাড়িয়ে

দয়াবতী, যাও, ফিরে যাও!