আর্কিমিডিসের উচ্ছ্বাস
সমরেন্দ্র বিশ্বাস
আর্কিমিডিসের মাথা
আর লীলাবতীর মুখ পার্কের অন্ধকারে মুখোমুখি। উদাসীন আকাশের মতো সেই মাথা, কেশ ও
শশ্রুর প্রাচীনতা লীলাবতীর চোখে ছায়া ফেলে।
ম্যাথামেটিক্সের
তত্ব ভুলে যাওয়া আমিই সেই আর্কিমিডিস! লীলাবতীর দুচোখের আলেয়ায় জেগে ওঠে একটা
ছায়াপথ, আমি তাকে অনুসরণ করি। পার্কের অন্ধকার থেকে কিছুটা দূরে, কোন ছোট্ট পুকুর
নয়, হঠাৎই আবিস্কার করি এক ভাসমান নদী,
চোরা স্রোত, যার নাম লীলাবতী। হৃৎপিন্ড আর চারপাশের হাওয়ারা শরীরময় চীৎকার করে আওয়াজ
তুলতে থাকে- ‘ইউরেকা , ইউরেকা!’
আর্কিমিডিসের
ইশারায় অন্ধকার ভেঙে অনেক রাতে লীলাবতী উঠে আসে পর্ণকুটিরে, নগ্নতার গোলাপী
পাপড়িগুলো ফুটে ওঠে, স্ফটিকে জ্বলে ওঠে আগুন। আমি লীলাবতীকে চুম্বন করি,
ঠোঁটে বুকে শরীরে। স্কুলে শেখানো সব পুঁথি, মুখস্ত করা
সমস্ত শ্লোক এসবকিছু ভুলে গিয়ে লীলাবতীর শরীর কেঁপে কেঁপে ওঠে। তার গোলাপী
মুখগহ্বর চুম্বকের মতো টেনে নেয় পৃথিবীর সব প্লবতা। আমার উত্তপ্ত দীর্ঘশ্বাসে নগ্ন
অন্ধকারের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে আর্কিমিডিসের মগ্ন উচ্ছ্বাস - ‘ইউরেকা , ইউরেকা’!
Comments
Post a Comment