আমার কোন প্রমান পত্র নেই।
আমার কোন প্রমান পত্র নেই।
সমরেন্দ্র বিশ্বাস
#
আমি নিজেকে জেনেছি সীমান্তবিহীন এক অস্তিত্ত্ব -
কেননা
কাঁটাতারের বেড়া
কোন
উদ্বেলিত প্রাণকে সীমান্তে আটকে রাখতে পারে না!
সেই
কবে থেকেই নিজেকে আমি মনে মনে ভাবি
চরাচর
জুড়ে ব্যাপ্ত নাগরিক পঞ্জিবিহীন কোনো জীবন কাহিনী!
আকাশের
ভাসমান পাখি-
ওদের কি কোনো রেশন কার্ড ছিলো?
আমি
হাওয়ায় হাওয়ায় উড়ে বেড়ানো ফুলের পরাগ,
যার ইচ্ছে নতুন
নতুন ফলকে ওগানো;
আমি
হাওয়া। ইচ্ছে
অনিচ্ছের বাইরে রপ্তানী হওয়া অজস্র শস্যবীজ -
যে
কিনা হাজার হাজার বছর ধরে নানা দেশে বহুবিধ সন্তানের জন্ম দিয়েছে।
#
আমাকে
ক্ষমা করো
-
এই
দেশে এ পর্যন্ত অনেকবার আমি পালটে ফেলেছি আমার জন্মনাম,
কারণ
নাম-পাল্টানোটাই আমার শখ।
এ
যাবৎ চার চার বার আমি পালটে নিয়েছি আমার জন্মতারিখ – কারণ আমার অজ্ঞানতা।
আমার
জাতি? –
সেও তো ব্লাকবোর্ডের কালো ইতিহাসে চক পেন্সিল দিয়ে ধূসর একটা লেখা -
এ
যাবৎ ডাস্টারের ধূর্ত হাতে বারবার মোছা গেছে আমাদের জাতিসত্ত্বা।
#
কাগজ
আমার নেই,
কাগজ আমি দেখাবো না
কাগজ
দেখানো ততটা বিবেচকের কাজ নয় -
কারণ
কাগজের হরফ ও স্বাক্ষরগুলো
যে
জল কালি বৃক্ষ লতাপাতা ঘাস জঙ্গলে লেখা
তাদের কারো
কোন সার্টিফিকেটই নেই,
কিংবা অসংখ্য
ভুল স্বাক্ষর এযাবৎ আড়ৎদারের নির্দেশে বিক্রী হয়ে গেছে।
#
আমার কোন প্রমান পত্র নেই।
তবু
আমি নাগরিক,
আজন্ম নাগরিক, জন্মসূত্রে বিশ্ব-নাগরিক!
আমি
রাস্ট্রের অদৃশ্য ডিটেনশন ক্যাম্পের দিকে যেতে যেতে হ্যান্ডশেক করছি
সৌরমন্ডলের
সেই পৃথিবীটাকে যারও কোন জন্ম-প্রমানপত্র নেই!
আমি
সকাল সকাল উঠে প্রনাম করেছিলাম সেই আবাহমান সূর্যটাকে
যার
জন্ম-প্রমানপত্র মন্ত্রীসভায় আজও অজানা।
#
হে
মহান পৃথিবী!
প্রত্যেক
রাত্রে তোমাকে কাছে পাবার জন্যে কেঁদে কেঁদে ফিরছে যে জোছনা
ও
হাওয়া
আমরা
সেরকমই তোমার বরপুত্র
– খ্যাঁকড়া মাটির রোমান্টিক সন্তান!
সবিনয়ে
জানাই -
আমার কোন প্রমান পত্র নেই।
প্রকাশিত – কবিতা সীমান্ত ( শারদীয়া – ২০২০
)
Comments
Post a Comment