হে যৌবন, অশ্বারোহী
হে যৌবন, অশ্বারোহী
সমরেন্দ্র বিশ্বাস
#
আমি বললাম,
দাঁড়াও ।
ঢ্যাঙ্ ঢ্যাঙ্ করে সে সোজা হাঁটতে লাগলো সামনে ।
আমি বললাম, কাঠাঁলী চাঁপার ঝোপে সাপ থাকে।
সে কথা শুনলো না
বনময় ঘুরে ঘুরে খুঁজে খুঁজে
সে গায়ে মাখিয়ে নিয়ে এলো কাঁঠালী চাঁপার সুগন্ধ ।
বললাম, এমনি করে জীবন কাটানো মানে নিজের বিরুদ্ধে হটকারীতা
!
তবু সে শুনলো না –
তাকে দেখা গেল সুন্দরবনের জঙ্গলে,
তাকে দেখা গেল মিছিলে, শহীদ মিনারে,
সে কথা শুনলো না –
দিনরাত ঘুরে বেড়ালো বাবুইডাঙ্গার মাঠে,
কেন্দুলিতে গিয়ে সে বাউল হয়ে গাইলো,
জেলের নৌকায় ঘুরে ঘুরে শেষ করে দিল কতদিন
সে কথা শুনলো না –
বেসাতি মেয়ের মুখে মুখ রেখে সে নীলকন্ঠ হয়ে গেল
লোকাল ট্রেনের চাকা রুখে দিয়ে ভগবান হয়ে গেল
একটা ক্ষ্যাপা ষাঁড়ের পিছু তাড়া করে ......
সে কথা শুনলো না – সে কথা শুনলো না ।
#
একদিন দেখি যুবকটা উঠে আসছে
পরিত্যক্ত এক পাতকুয়ো থেকে,
কোলে তার পড়ে-যাওয়া অর্দ্ধমৃত এক শিশু –
হো হো করে হেসে উঠছে সেই যুবক,
কারো নিষেধ না শুনে
সমস্ত পৃথিবীর অর্দ্ধমৃত আত্মাকে কোলে নিয়ে
সে আপন খেয়ালে
মৃত্যুর বিরুদ্ধে লড়াই লড়াই খেলছে ।
#
ছবি ঋণ - শ্রী নন্দলাল বসু
[ কাব্যগ্রন্থ – তবু
স্পন্দমান পথ ]
Comments
Post a Comment