আমার দু -হাত
আমার দু -হাত
সমরেন্দ্র বিশ্বাস
দীর্ঘতম
পথ দিয়ে চলে যাওয়ার সময়ে
মূহুর্তগুলোকে
দুহাতে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছিলাম ;
আজ
এ দু হাতের মুঠোয় শুধুই অবারিত শূণ্যতা !
#
এ
জীবনে আমার অনেক রকমের কাজ ছিল ,
প্রত্যেকটা
কাজই জন্ম দিয়েছিল নাবাল এ দুহাতে – কিছু গাছ
কিছু
তার আগাছা,
হাতের
মুঠো খুললে তাই দেখতে পেতাম
গোছা
গোছা শেকড় ।
হাতের
তালুতে লেগে থাকতো
রক্তের
ছাপ, ঘামের
তিক্ততা ;
অজস্র
ছবি পিছলে যেতো আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে ।
হাতের
উপত্যকা বেয়ে নেমে আসতো দুঃখের ঝর্ণারা
হাতের
মুঠোয় ঝান্ডারা লিখে রাখতো প্রতিবাদ
হাতের
ছন্দময়তায় গান গাইতো রবিশঙ্করের মুর্চ্ছনা
হাতের
স্পর্শে লেগে থাকতো তোমার স্পর্শের সুখ
হাতের
মুদ্রায় অবনত থাকতো প্রভুর জন্যে কিছু প্রণিপাত।
#
ওই
সমস্ত ঘামের তিক্ততা,
রক্তের
রেখা
সুখ-দুঃখ
সমস্ত
উষ্ণতা
ছন্দময়তা
সমস্ত
প্রণিপাত সমস্ত প্রতিবাদ
এবং
আমার সমস্ত কাজগুলো
আমাকে
নিয়ে যেতো আরো এক পূর্ণতার দিকে ।
#
তবে
এ’ দু
হাতের মুঠোয় কেন আজ শুধু অবারিত শূণ্যতা ?
#
আকাশের
শূণ্যতায় ভাসতে ভাসতে দেখি , আমি নেই -
আমার
দুটো হাতই আগুনে পুড়ছে ,
এক
হাত থেকে ধেয়ে আসছে কালো ধোঁয়া
অন্য
হাত থেকে ভেসে আসছে চন্দনের সুবাস ;
তোমরা
দেখছো
অন্তিম
মানুষকে ভালোয় কালোয় ;
তোমরা
দেখছো
অনিবার্য
উত্তাপের লক্ লকে শিখাগুলো
হেসে
হেসে বলছে - বন্ধু
বিদায় !
##
[ কাব্যগ্রন্থ – অনন্ত জলশব্দে আমি ]
Comments
Post a Comment