জেব্রার থিওরোম
কবিতা
জেব্রার
থিওরোম
সমরেন্দ্র
বিশ্বাস
জেব্রার
সাদা কালো দাগে হাত বুলিয়ে কেউ কি সমাধান করতে পারে জ্যামিতির থিওরোম? চিড়িয়াখানা থেকে
বেরিয়ে এসেছে যে স্কুল, সেখানে আমার সেকেন্ডারীর ক্লাসটা ঝোলানো আছে
ধার করা জামার ছেঁড়া পকেটে।
টানটান
টাকার-সেতার বাজে ফেমাস স্কুলে। শহরে শহরে
শিক্ষকদিবসের ইভিনিং
শো-তে আজকাল খুব ভীড়। আমার কি আর ম্যাট্রিক, থুরি, সেকেন্ডারীটা পাশ
করা হলো না?
আকাশ
থেকে উড়ে আসে বইএর বিচিত্র মলাট; কাকের পালকেরা লেপ্টে থাকে ল্যাপটপের সৌখীন ঘাসে।
জীবনের
ক্যালেন্ডার আর পরীক্ষার সিলেবাসে কোন তালমিল আছে কি? তবুও যানজটে দিশেহারা আমি পৌঁছে
যাই প্রেইরী ঘাসের জঙ্গলে। সেখানে ফিস্ দেয়া সম্ভ্রান্ত ছেলেমেয়েরা ঘাসের
বেলুন ফোলাচ্ছে। জেব্রার জামা পরে শিক্ষকেরা ঘুরে ঘুরে ঘাস খাচ্ছে।
বিজ্ঞাপনের
সাইরেণ বাজলে তথাকথিত
শিক্ষা
পর্ষদের জুতোর লেস খুলে যায়। ঘোষিত হয় – হায়ার সেকেন্ডারী
পাশের
ধূলোট বাদামী রাস্তা পোলট্রির মুরগীদের মতো মিথ্যে মিথ্যা মিথ্যা! মেশিনে
ঢালাই করা নতুন নতুন রাস্তা চলে গেছে অসম্ভব সমস্ত বর্ণাঢ্য থিওরোমের দিকে, সেখানে সোনার খনি
বাজছে!
আপাততঃ
টাকা
দিয়ে কয়েকটা
ফড়িং ধরে আনতে পারলেই এডুকেশন সিস্টেম ছাত্রদের গলায় ঝোলাবে কর্পোরেট মেডেল, ভূর্য্যপত্রের স্বাক্ষরবিহীন
ডিজিটাল
মার্কসশীট।
বর্ণাঢ্য
থিওরোম আর মেশিনে ঢালাই নতুন রাস্তারা সুনীল আকাশের দিকে মাস্টার্স ডিগ্রীর ডিজিটাল
রুমাল
নাড়ছে। কয়েকটা সাদা পায়রা সেই সব রুমাল পকেটে গুঁজে তাদের স্বচ্ছ্বল ডানায়
অন্য
দিগন্তের দিকে
উড়ে গেলো, যেখানে লকারে ঘেরা জীবনের ডিকশেনারি।
জেব্রার
সাদাকালো দাগে হাত বুলিয়ে ভাবাচ্যাকা আজও আমি বসে আছি থিওরোমের কিনারায়।
বিষয়টা
খুবই
সহজ, অথচ আমার এখনোও
ম্যাট্রিক পাশটা হলো না।
[31.10.2021 / R-1]
শৈলী , বইমেলা-২০২২
Comments
Post a Comment