Posts

Showing posts from October, 2020

এখন বনাঞ্চলে

  এখন বনাঞ্চলে সমরেন্দ্র বিশ্বাস   ছুটন্ত বুলেটকে পাথর কিংবা ভাগ্যলিপি ভেবে যেসব আদিবাসী মানুষেরা জঙ্গল কিংবা টিলার আড়ালে মুখ লুকায় তারা এই বনাঞ্চলেই থাকে।   পোষাকে বল্কল, মহুয়ার নেশায় এইসব মানুষেরা দুহাতে অঞ্জলি পেতে চেয়েছিলো শান্তি অরণ্যের নির্জনতা, ঘোটুল সংগীত গাছের ছায়ায় উড়ন্ত পাখির জীবন প্রাচীন শস্যের ঘ্রাণ।   অথচ ঘাতক সন্ত্রাসে বনাঞ্চল আজও অন্নহীন, শান্তিহীন - ময়দানে ইতিউতি পড়ে আছে দ্যাখো ছিন্ন শির শিমুলের ফুল !     মৈত্রীদূত – শারদীয়া - ২০১৮

যাবে, তোতন?

Image
  যাবে , তোতন ?   সমরেন্দ্র বিশ্বাস একটা দিন , অন্ততঃ একটা দিন ! আমার কথায় রাজী হবে ? সঙ্গে যাবে ? তুমি আমার সঙ্গে যাবে ? অন্ততঃ একটা দিন !   খুঁজতে খুঁজতে কোথায় যাই ? সাধ হয়েছে তোমায় নিয়ে ছোট্টবেলা খুঁজতে চাই ! # এই আমার যা কিছু ছিল ভরিয়ে দেবো তোমার হাত সকাল বেলার সূয্যিপ্রণাম হাঁটার পথে বেড়া - ভাঙ্গা স্কুল , কঞ্চি হাতে রমেশ মাষ্টার দুপুর একতারা বোষ্টুমী মায়ের হাতে ভাতের থালা , কাঁঠালপিড়ি সজনেগাছের শুয়াপোকা , ফড়িং ওড়া , বেড়ার ধারে ছাগল - ডাক বিকেলবেলা ফুটবলের মাঠ , জামা প্যান্টে চোরের - কাঁটা নেবে তুমি ? # এই আমার যা কিছু ছিল তুলে দেবো তোমার হাতে বরফ কাঠির আইসক্রিম , ফেরিয়ালার সুরেলা ডাক রেশনদোকান , চালের লাইন বাঁদরনাচ ডুগডুগির খেল , কাঠের বাক্সে বায়োস্কোপের গান হাডুডু খেলা , ডান্ডা - গুলি , নাকি দারিয়াবান্ধা ? বিকেলবেলা পাগল - পিসির আকুল - ডাক , সূর্যডোবা ঝিলের ধার কেরোসিন ল্যাম্প , তুমি কি নেবে ? # তোমার থেকে ফিরিয়ে নিলাম ভিডিইয়ো গেম তোমার থেকে ছিনিয়ে নিলাম অন - লাইন ক্লাস তোমার থেকে খুলে নিলাম টিভির চোখ তোমার থেকে ...

শহরের স্মৃতিস্তম্ভ

Image
  শহরের স্মৃতিস্তম্ভ   সমরেন্দ্র বিশ্বাস # এই স্মৃতিস্তম্ভে আটকে থাকা অদৃশ্য রক্তের ছাপ ও অক্ষরগুলো চৈতী মেঘের , যা একদিন আগুন বেয়ে নেমে এসেছিল মাটিতে । চার পাশে এখন শুনশান ঘাস , আর কিছু পৌর প্রধান ফুল । বাকী সবটাই আজ গল্প কথা ! # পৌরসভার এই মাননীয় স্মৃতিস্তম্ভটিকে ঘিরে পরিপাটি মার্বেল পাথর , ফিউজ ল্যাম্পপোষ্ট , সুসজ্জিত কান্না – যা এখন দৃশ্যমান সমস্ত কিছুই বিধিবদ্ধ ভাবে কেনা হয়েছিল অন্ধকার মুদ্রায় , রাত্রির টেন্ডারে !   Published in ‘Swinhoon Street’ – Sharadiya -2020  

কেউ আসে না

Image
  গল্প কেউ আসে না     সমরেন্দ্র বিশ্বাস   # কাকেরা কি ডাকতে ভুলে গেছে , নাকি চলে গেছে অন্য কোন শহরে ? শিবানী সকালে দরোজা খুলে দেখে রাস্তায় জনমুনিষ্যি নেই । রোববার জনতা কার্ফুর পর শঙ্কর দুদিন কাজে গেছিলো । দুদিন বাদেই বুধবার থেকে লকডাউন । কাজ নেই । দিনে শুনসান – রাতে ভূত নামে । শুক্রবার সকালে সামান্য কাশি , দুপুরের দিকে হালকা জ্বর এলো শঙ্করের । ভয় পায় , এ জ্বর করোণার নয় তো ? চারদিকে এখন করোনা ফরোনা কিসব ঘুরে বেড়াচ্ছে , ওরা নাকি কাউকে পেলেই জ্যান্ত ধরে নেয় । লোকের শরীরে ঢুকে পড়ে । এজন্যে লোকেদের বাইরে বেরোনো বন্ধ । দোকানপাট বাস ট্রেন সবই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে । ওদের দুজনের কাজে যাওয়াও বন্ধ । শঙ্কর দূরে একটা রেল স্টেশনে মাল বওয়ার কাজ করে ; ট্রেন বন্ধ , তাই কাজও নেই । শিবানী সামনের বাজারে দুতিনটে চায়ের দোকানে বাসন - পত্র মাজে , ঠিকে সময়ের কাজ । মার্চের বুধবার থেকে লকডাউনের জেরে সব ডকে উঠেছে ! এরই মধ্যে শঙ্কর শুক্রবার থেকে অসুখ বাঁধিয়ে ফেলেছে । কি করে খবর পেয়েছে কে জানে ! মিউনিসিপ্যালেটির গাড়ী ওকে ধরে নিয়ে গেছে , সিধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি । ...